এই ব্লগটি সন্ধান করুন

সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯

রোজ নামের একটি মেয়ে


রোজ নামে একটি মেয়ে ছিল যে গোলাপ ফুল খুব পছন্দ করত।।

তার স্বামী তাকে প্রতিটি ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে গোলাপের তোড়া পাঠাতো আর সাথে থাকতো একটি করে কার্ড,

যেখানে লেখা থাকতো সে তাকে কতোটা ভালবাসে।

... কিন্তু হঠাত্‍ একদিন রোজের স্বামী মারা যায় ।কিন্তু রোজের স্বামী মারা যাওয়ার এক বছর পরের ভ্যালেন্টাইন্স

ডে তেও রোজ একি ভাবে কার্ড সহ গোলাপের তোড়া পেল, কার্ডে লেখা ছিল“আমি গত বছরের এই দিনে তোমাকে

যতটুকু ভালবাসতাম, এখন তার থেকে আরও বেশি ভালবাসি। প্রতিটি বছর পার হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তোমার জন্যে আমার এই ভালবাসা আরো বাড়বে”।

রোজ ভাবল, তার স্বামী হয়ত মারা যাওয়ার অনেক আগেই তার জন্যে গোলাপের অর্ডার দিয়ে রেখেছিল আজকের দিনটির জন্যে।

সে মন খারাপ করে ভাবলো এটাই তার শেষ ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া গোলাপের তোড়া।

সে ফুলগুলিকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখল আর তার স্বামীর ছবি দেখেই দিনটি কাটিয়ে দিল।

এভাবে দেখতে দেখতে এক বছর কেটে গেল। এই এক বছর ভালবাসার মানুষটিকে ছাড়া একা একা থাকা রোজের জন্য ছিল খুবই কষ্টের।

ভ্যালেন্টাইন্স ডে এর দিন সকালে তার বাসায় কে জানি বেল বাজালো। সে দরজা খুলে দেখতে পেল দরজার

সামনে কার্ডসহ গোলাপের তোড়া রাখা। সে অবাক হয়ে কার্ডটিপড়ে দেখল এটা তার স্বামী পাঠিয়েছে।

এবার সে রেগে গেল কেউ তার সাথে মজা করছে ভেবে। সে ফুলের দোকানে সাথেসাথে ফোন করে জানতে চাইলো এই কাজ কে করেছে। দোকানদার তাকে যা

বলল তা হল “আমি জানি আপনার স্বামী এক বছর আগে মারা গেছেন, আমি এও জানি আপনি আজকে

আমাকে ফোন করে সব জানতে চাইবেন। আপনারস্বামী আগে থেকেই সব পরিকল্পনা করে রাখতেন।

তিনি অনেক আগেই আমাকে বলে রেখেছিলেন আপনাকে যেন প্রতি ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে আমার দোকান থেকে গোলাপ ফুল পাঠানো হয়।

তিনি আগাম টাকা পরিশোধ করে গেছেন। আরওএকটি জিনিষ আছে, যা আপনার জানা দরকার।

আপনার স্বামী আমার কাছে আপনার জন্যে একটিবিশেষ কার্ড লিখে রেখে গেছেন, তিনি বলেছিলেন যদি

আমি কখনো জানতে পারি যে তিনি মারা গেছেন, শুধু তাহলেই যেন কার্ডটি আপনাকে দেয়া হয়। আমি আপনাকে কার্ডটি পাঠিয়ে দিব”।

রোজ যখন কার্ডটি হাতে পেল তখন সে কাঁপা কাঁপা হাতে কার্ডটি খুলে দেখতে পেল,

সেখানে তার স্বামী তার জন্যে কিছু লিখে গেছে। সেখানে লিখা ছিল “আমি জানি আমার চলে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে,

এই এক বছরে তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে। কিন্তু মনে রেখ আমি তোমাকে সব সময় সুখী দেখতে চেয়েছি, তোমার চোখের পানি নয়। তাই প্রতি বছর তুমি আমার কাছ থেকে ফুল পাবে।

যখনই তুমি ফুলগুলো পাবে, তখন ফুলগুলোকে দেখে আমাদের ভালবাসার কথা মনে করবে,

মনেকরবে আমাদের একসাথে কাটানো সুন্দর মুহূর্তগুলোকে। সবসময় হাসিখুশি থাকতে চেষ্টা করবে, আমি জানি এটা

অনেক কঠিন হবে তবুও আমি আশাকরি তুমি পারবে। প্রতি বছর তোমাকে গোলাপ পাঠানো হবে একবার করে। তুমি যদি ফুলগুলোকে কোন একদিন না নাও, তাহলে

দোকানী সেদিন তোমার বাসায় পাঁচবার যাবে দেখার জন্যে যে তুমি বাইরে গেছো কিনা।

শেষবার দোকানী অবশ্যি জানবে তুমি কোথায়। সে তখন ফুলগুলোকে সেখানে পৌছে দিয়ে আসবে যেখানে আর তুমি আবার

একবারের মত একসাথে হব চিরদিনের জন্যে। তুমি সবসময় মনে রাখবে আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি।প্রতিবিম্বে প্রতিবিম্বে শুধুই তুমি।”

***আপনার জীবনে কখনো না কখনো এমন একজন আসে যে আপনার জীবন কে পুরো বদলে দেয় আপনার জীবনের একটা অংশ হয়ে।

যে আপনাকে উপলব্ধি করতে শেখায় যে পৃথিবীটা অনেক সুন্দর।।

রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯

রোজ সকাল


রোজ সকাল


রোজ সকালে ঘুম থেকে দেরী করে উঠা একটা নিয়মিত রুটিনে পরিনত হয়েছে।

তাই আজও তার ব্যাতিক্রম হয় নি। আমি অবশ্য নিয়মিত ভার্সিটি যাই নাহ।

বিকেলে স্যারের বাসায় পরতে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম।

রাস্তার মোড় পেরুতেই পিছন থেকে একটা মেয়ে ঠিক আমার পাশে এসে আমার পায়ের তালে হাটতে শুরু করেছে।

আমি ব্যাপার টাকে তেমন একটা গুরুত্ব দিলাম নাহ। কিন্তু পরক্ষনেই তা ভুল প্রমান হলো।

-এই যে , আপনার ফোনটা দিন তোহ।(মেয়ে)

-জ্বী, কি বললেন?

-আচ্ছা আপনাকে দেখে তো সুস্থই মনে হচ্ছে।কিন্তু আপনি যে কানে একটু কম শুনেন তা তো জানা ছিলো নাহ।(মেয়ে)

-হোয়াট ননসেন্স! আমি কানে কম শুনবো কেন?

-তাহলে আমি যা বললাম তা আপনি কি শুনেন নাই?(মেয়ে)

-কি বলছেন আপনি

-আপনার ফোনটা দিন।(মেয়ে)

-কেন? আমি আপনাকে ফোন দিবো কেন? আমি তো আপনাকে চিনি নাহ।

-কিন্তু আমি আপনাকে চিনি।(মেয়ে)

-কি করে চিনেন?

-আমি আপনাকে ভালবাসি।(মেয়ে)

-কিহ?

-আচ্ছা আপনি কি সত্যিই কানে কম শুনেন? এতে কিন্তু আমার প্রেসটিজ কমবে। আপনি দ্রুত একটা ডাক্তারের শনাপন্ন হবেন। ওকে।(মেয়ে)

-কি যা তা বলছেন আপনি।

-আমি যা তা বলি নি । বলছি যে আমি আপনাকে ভালবাসি।(মেয়ে)

-আর আপনি আমাকে চিনেনই বা কিভাবে?

-আমি আপনাকে রোজ ফলো করি। আপনার নাম ঈষান, আপনি এবার অনার্স ৩য় বর্ষে ঢাবি তে ফিজিক্স নিয়ে পরছেন।(মেয়ে)

(এখন অবশ্য অবাক হবার পালা,গড়্গড় করে একের পর এক ডিটেইলস বললো)

-আআআআপনি এত কিছু জানেন কিভাবে?

-এত কিছুই না, আরো কত কি জানি।(মেয়ে)

-কিন্তু কিভাবে জানেন?

-কারন আমি আপনাকে ভালবাসি।(মেয়ে)

-কেন ?

-আচ্ছা আমি কিন্তু অনেক আগেই আপনার ফোনটা চেয়েছি। ফোনটা দিন এবার।(একটু ঝাড়ি দিয়ে)(মেয়ে)

(আমিও বাধ্য ছেলের মত পকেট থেকে ফোনটা বের করে দিলাম।)

-এই নিন।

(দেখলাম কি যেনো করলো। বাট ঠিক করে খেয়াল করতে পারি নি)

-এই নিন আপনার ফোন।(মেয়ে)

-কি করলেন?

-কিছু নাহ। যান এবার, আপনার পড়ার সময় চলে যাচ্ছে।(মেয়ে)

আমার নামটা তো আগেই জানলেন। আমি কোথায় পড়াশোনা করি তাও জানলেন।

রাতে বাসায় এসে, ফ্রেশ হলাম।খেয়েদেয়ে শুয়ে পরলাম। ফেসবুক গুতাগুতি করছি।রাত প্রায় ১০ টা বাজে।এমন সময় হটাত ফোন, ঐন্দ্রিলা নামটা ফোনের স্ক্রিনে ভেসে উঠলো।

গভীরভাবে ভাবতে ভাবতে কলটা কেটে গেলো। আবার ফোন। এবার রিসিভ করতেই হবে।

-আসসালামুয়ালাইকুম।

-ওয়ালাইকুমুস সালাম।(ঐন্দ্রিলা)

-জ্বী কে বলছেন?

-কানে কম শোনার সাথে সাথে কি চোখেও কম দেখেন নাকি।(ঐন্দ্রিলা)

-চোখে কম দেখবো কেন?

-তাহলে আমাকে আবার জিজ্ঞেস কেন করলেন যে আমি কে? আমার নামটা আপনার ফোনে তো সেভ করাই ছিলো।(ঐন্দ্রিলা)

-ও তার মানে আপনিই সেই অপরিচিতা।

-জি। (ঐন্দ্রিলা)

-তা ফোন করলেন কেন? -এমনি, ভালবাসার মানুষের খোজ খবর নিতে হবে না, তাই আরকি।(ঐন্দ্রিলা) -কিসের ভালবাসা, আমি তো কিছুই বুঝি নাহ।

( এই নিয়ে সেদিন রাতে অনেক কথা হলো, মেয়েটির নামতো অলরেডি পাবলিশড,ঐন্দ্রিলা এবার আমারই ভার্সিটির ১ম বর্ষের ছাত্রী।)

আজ অনেকটা দিন হয়ে গেলো ঐন্দ্রিলার সাথে আমার পরিচয়, আমি ওকে অপরিচিতাই ডাকতাম।

কিন্তু ভালবাসাই আমি বিশ্বাসি নাহ।বিশ্বাসি না বললে ভুল হবে, বিয়ের আগে বিশ্বাসি নাহ।

জন্ম মৃত্যু বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে।

কার সাথে কার বিয়ে হবে তা শুধু একমাত্র আল্লাহ পাক জানেন।

এক জনের আমানতের উপর আমার কোন অধিকার থাকতে পারে নাহ, না নেই।

আমি যে মেয়েকে ভালবাসি তাকে আদোউ পাবো কিনা তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? না নেই।

সে তো অন্য কারো আমানতও হতে পারে।

তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে বিয়ে যাকে করবো তাকেই ভালবাসবো।

পড়শুনা কমপ্লিট করে একটা সরকারী চাকুরী করছি।

আমার অবশ্য চাকরী না করলে কারো কোন ক্ষতি হবে নাহ।

আজ অফিস বন্ধ, কারন আজ শনিবার,সরকারি অফিস গুলোতে শনিবার দিন কাজ বন্ধ থাকে।তাই খুব বেলা করে ঘুমাচ্ছি।

পাশের রুম থেকে হো হো হাসাহাসির আওয়াজ পাচ্ছি।তার মানে কোন মেহমান এসেছে।

ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে গেয়ে ১২০ ভোল্টের একটা শক খেলাম।

একি , চোখটা ভালোভাবে কচলিয়ে আবার তাকালাম।

আরে এই মেয়েটার তো সাহস কম নাহ। আমার বাসায় চলে আসছে।

আর আমার বোন , মা সবাই তো আসর জমিয়ে ফেলেছে।

আমি আবার আমার রুমে এসে বিছানায় গা টা হেলিয়ে দিলাম।

আমারও যে ঐন্দ্রিলাকে ভাল লাগে না তা নাহ।আমারও ওকে ভাল লাগে।হটাত দরজায় নক।

দেখি ঐন্দ্রিলা আমার দিকেই আসছে।

এসেই আমার উপর চড়ে বসলো।

-কি বলছিলে তুমি, আমাকে ভালবাসতে পারবে না, তাই নাহ? এবার দেখো ।(ঐন্দ্রিলা)

এই বলেই আমার রুম থেকে চলে গেলো।

আমি তো পুরো বলদ হয়ে গেলাম।চুপচাপ বসে আছি।

রাতে আদিবা(ছোট বোন) রুমে আসলো।

-কিরে তলে তলে এতদূর, আর আমরা কিছুই টের পেলাম নাহ।(আদিবা)

-কি যাতা বলছিস। কথা না পেচিয়ে সোজাসুজি বল।

-এই আমার সাথে ন্যাকামি করবি না একদম। মেয়েটার সাথে তোর রিলেশন আমাদের জানাস নাই কেন?(আদিবা)

-কি বলিস, কোন মেয়ে, কার সাথে রিলেশন?

-আকাশ থেকে পরছিস মনে হচ্ছে।(আদিবা)

-ঐন্দ্রিলা আপুর সাথে যে তোর এক বছরের রিলেশন তা আমাকে বলিস নি কেন?

আর তোকে বিয়ের কথা বললেই পালাস। এবার তোর বিয়ে দিয়েই ছাড়বো।(আদিবা)

-যা খুসি তাই কর।

কিছুক্ষন পর আবার আম্মুর আগমন।

-এই মেয়েটার নাম্বার দে তোহ, আমি নাম্বারটা রাখতে ভুলে গেছি।

-কোন মেয়ের নাম্বার?

-কোন মেয়ে মানে? তুই যাকে বিয়ে করবি তার নাম্বার।

-আমি আবার কাকে বয়ে করবো।

-ঐন্দ্রিলার নাম্বারটা দে।

সব কিছু কেমন যেনো গুলিয়ে যাচ্ছে। সামনের মাসের ২৪ তারিখ নাকি আমার বিয়ে।

এই মেয়ে আমাকে বিয়ে করেই ছাড়বে।বিয়ের দিন তারিখ ঘনিয়ে এলো। আজকে আমার বাসর রাত, সরি আমাদের বাসর রাত। সব কিছু খুব থীজি স্পিডে হয়ে গেলো।

-কিরে এখানে দারিয়ে কি করছিস?(আম্মু)

-কিছু নাহ।

-যা রুমে যা, বউমা অপেক্ষা করছে।(আম্মু)

পরিশেষে রুমের দিকে যাবার জন্য পা বারালাম।রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলাম। এক বিরাট মাপের ঘোমটা দিয়ে খাটের উপর কে যে বসে আছে তা বুঝা যাচ্ছে নাহ।

তাই বুঝার জন্য কাছেই যেতে হবে। কাছে যাবার সাথে সাথে ঘোমটা খুলে যা দেখলাম, তা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম নাহ।

আপনারা আবার অন্য কিছু মনে কইরেন নাহ যে কি দেখলাম।দেখিছি আমার বউকে। ঐন্দ্রিলা দেখতে এমনিতেই অনেক সুন্দর।

আর আজ আমার মনের আশা পুরন হলো। এখন থেকে আমার সব ভালবাসা আমার বউয়ের জন্য।

বাসর রাতে কি কি হয় তা কম বেশি সব বয়সের মেয়ে ছেলেদেরই কম বেশি জানা আছে। কারন আজকাল ছেলে মেয়েরা ইচড়ে পাকা।

তাই এই কথা গুলো না বলাই ভালো। রাতে অনেক দুষ্টমির পর। ঘুমিয়ে পরলাম। সকাল হয়ে গেছে অনেক আগে।

কিন্তু পাশে হাত দিয়ে দেখি কেউ নেই। তার মানে ঐন্দ্রিলা আরোও আগে উঠেছে। আমি আবার বিছানায় শুয়ে পরলাম।

কিছুক্ষন পর ঐন্দ্রিলার আগমন। মনে হচ্ছে গোসল করে এসেছে। ভেজা চুল গুলো তার উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের পিঠে ঝাপটে আছে। পড়নে হলুদ কালারের একটা শাড়ী।

হলুদ রঙ টাতে তাকে খুব ভালোই মানায়। জানালা খুলতে যাবে ঠিক তখনই এক টানে নিজের কাছে নিয়ে আসলাম।

-এই ছাড়ো , কেউ দেখে ফেলবে।দরজা কিন্তু খোলা।(ঐন্দ্রিলা)

-না কেউ দেখবে নাহ।

-ছাড়ো বলছি, সারারাত খালি দুষ্টমি করছো, এখন আবার শুরু করছো।(ঐন্দ্রিলা)

-আমার বউ, আমি যা ইচ্ছে তাই করবো।

-উফফ এত ছেলে মানুষি করো নাতো। ছাড়ো।(ঐন্দ্রিলা)

-ওকে, তাহলে একটা পাপ্পি দাও, তাহলে ছাড়বো, নাহলে আজ আর ছাড়ছি না।

-ওকে দিবো, তার আগে দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে আসি, তা না হলে কেউ দেখে ফেলবে।(ঐন্দ্রিলা)

-ওকে যাও।

-হাহা। বোকা হাদারাম কোথাকার, তুমি এখন আরো বেশি করে ঘুমাও, আমি যাচ্ছি,(ঐন্দ্রিলা)

-এই এই, তুমি কিন্তু চিটিং করছো,

ফ্রেশ হয়ে অফিসে গেলাম।

আজকে নিজের টাই নিজেই বেধে ফেললাম, বউকে দিয়ে টাই বাধালে নাকি ভালবাসা বাড়ে, কিন্তু আজ সেটা হলো

অফিসে চলে গেলাম, এর মাঝে অনেক কথা হয়েছে। রাতে বাসায় ফিরে আসলাম।

পরের দিন সকালে টাই বাধার জন্য ঐন্দ্রিলাকে ডাক দিলাম।

-এই আমার টাইটা একটু বেধে দাও তোহ।

-এত বড় হয়েছো একটা টাই ও বাধতে পারো নাহ?(ঐন্দ্রিলা)

(ঐন্দ্রিলা আমার পায়ের উপর দাঁড়িয়ে আমার টাই বাধছে, আর আমি তার দিকে অপলক তাকিয়ে আছি।

মেয়েটির নাকের উপর বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছিলো। বেশ ভালোই লাগছিলো।)

-এখন কই যাবা, সোনা।

-এই ছাড়ো , প্লিজ।(ঐন্দ্রিলা)

-উহুম, আজ আর ছাড়ছি না, তোমাকে বিশ্বাস নেই, তুমি আবার পালাবে।

তাই তার সেই গোলাপী ঠোটে এক লম্বা পাপ্পি দিয়ে দিলাম।

-আজ রাতে তুমি বাসায় আসো তার পর তোমার মজা দেখাচ্ছি।

অত-পর রোজ সকালে টাই বাধার সাথে সাথে একটা পাপ্পি ফ্রী।

ভালবাসাটা সত্যিই অন্যরকম

শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৯

বৃষ্টি নামের মেয়েটি


আমি খুব অস্থিরতার মধ্যে আছি তোমাকে একটা সত্য কোনো ভাবেই বোঝাতে না পেরে।

একটা মানুষ আর কতো কদর্য ভাবে বলতে পারে আমি জানি না। আমি তোমাকে ভালোভাবে বলেছি, আবার অনেক কদর্যভাবেও বলেছি।

কোনোভাবে বলেই যখন কাজ হচ্ছে না তখন আমি সত্যিই দিশেহারা। তুমি প্রতিদিন কষ্ট পাচ্ছ, আমার কারণে, আমার ব্যবহারে।

অথচ আমি এটা চাই না। এভাবে কষ্ট পাওয়া তোমাকে মানায় না।

আজকাল তোমার কথা ভাবতে গেলেই বারবার সেই বিখ্যাত আমেরিকান গল্পটা মনে পড়ে। গল্পটা শোনো। তোমার জন্যে খুব প্রযোজ্য।

এক বালকের খুব বাঁশি বাজানোর শখ। সে স্কুল যাবার সময় পথে একদিন এক বংশীবাদককে বাঁশি বাজাতে দেখে।

সেই বাঁশি ওয়ালা হয়তো অতো চমৎকার বাঁশি বাজায় নি; কিন্তু জীবনে প্রথম শোনা সেই বাঁশির মিষ্টি সুর ভীষণ মুগ্ধ করে তাকে।

হঠাৎ করেই বাঁশির প্রতি এক দুর্নিবার টান অনুভব করে সে। তারপরেই সে সিদ্ধান্ত নেয় যে সেও বাঁশি বাজানো শিখবে।

সেদিন বাসা ফিরেই সে তার বাবাকে সেই বঁশিওয়ালার কথা বললো। তারপরেই চেয়ে বসলো তার নিজের জন্যে একটা বাঁশি।

বললো, সেও সেই রকম সুন্দর করে বাঁশি বাজানো শিখবে। বাবা তার কথা শুনলেন। হাসলেন।

কিন্তু ছেলের পড়াশুনার ক্ষতি হবে বা এসব ঠুনকো আবেগকে পাত্তা দেয়া উচিৎ নয় ভেবে বা অন্য যে কোনো কারণেই হোক বাঁশি কিনে দিতে রাজি হলেন না।

কয়েক সপ্তাহ ধরে চেয়ে চেয়ে বাবার কাছ থেকে বাঁশি কিনে না পেয়ে মনের দূ:খে সে সিদ্ধান- নিলো যে সে নিজেই একটা বাঁশি কিনবে।

স্কুলে টিফিন খাবার জন্যে প্রতিদিনই মা তাকে কিছু পয়সা কড়িদিতেন

। সে টিফিন খাওয়া বন্ধ করেদিয়ে সেইটাকা জমাতে লাগলো বাঁশি কিনবে বলে। এদিকে বাঁশি কেনার দুশ্চিন্তায় তার দিন কাটেনা,রাত কাটে না।

কখন তার টাকা জমবে, আর কখন সে বাঁশি কিনবে! মহা অস্থিরতা মনে মনে। প্রতিদিনই সে টাকা গুনে দেখে আর টাকা

বেশি করে জমছে না দেখে মন খারাপ করে বসে থাকে। বাঁশির দাম সে জানে না,

কিন্তু যে বাঁশিতে এতো সুন্দর প্রাণ উতলা করা সুর ওঠে সে বাঁশির দাম নিশ্চয়ই কম নয়- এমনই তার ধারণা।

মাস দুয়েক পর একদিন সকালে সে স্কুল ফাঁকি দিয়েবাঁশি কিনতে বেরিয়ে পড়লো। সংগে দুই মাসে জমানো সমস্ত টাকা।

কিছুদিন আগে সে তার এক বন্ধুর সংগে গিয়ে শহরের মাঝামাঝিতে অবস্থিত একটা বাঁশির দোকান চিনে এসেছিলো।

এখন ছুটলো সোজা সেই দোকানে। একটা কালো লম্বা সরু বাঁশি তার পছন্দ হলো।

এরকমই একটা বাঁশি সে সেই বাঁশিওয়ালাকে বাঁজাতে দেখেছিলো। সেই মোহনীয় সুর তুলতে হলে তাকেও এই বাঁশিই কিনতে হবে।

বালক বাঁশিটি হাতে নিয়ে দোকানীর সামনে গেলো। তারপর তার প্যান্টের পকেট উল্টে সবগুলো টাকা আর কয়েন ঢেলে দিলো মেঝেতে।

তারপর বললো, আমি এই বাঁশিটা কিনবো। দেখুন তো এই টাকার হয় কিনা।

দোকানী দেখলো অনেকগুলো খুচরো কয়েন। বললো, আমি গুণে দেখি, তুমি ততোক্ষণে অন্য বাঁশিগুলোও দেখতে পারো।

দোকানীর কথামতো সে গ্যালারীর সামনে এসে অন্য বাঁশি গুলো দেখতে লাগলো। কিন্তু আর বাঁশি দেখে কি হবে?

সে তো স্থির করেই ফেলেছে যে হাতের কালো বাঁশিটিই সে কিনবে, অন্য বাঁশি নয়। তাতে দাম যতোই লাগুক।

দোকানী গুণে দেখলো যে প্রায় পঞ্চাশ টাকা। কিন্তু সেই বাঁশির দাম তো মাত্র পাঁচ টাকা। দোকানীর সন্দেহ হলো।

এতো টাকা এই বাচ্চা ছেলে পেলো কোথায়? নিশ্চয়ই তার বাবা মা তাকে বাঁশি কেনার জন্যে এতো টাকা দেয় নি?

তাদের তো মোটামুটি দাম জানা থাকার কথা। তাহলে কি এই বালক বাসা থেকে টাকা চুরি করে এনেছে?

এ কথাই জিজ্ঞেস করার জন্যে দোকানী ডাকলো বালটিকে, “এই যে বাবু, এদিকে এসো।” বালকটি ভাবলো, বোধায় টাকা কম আছে।

দামে হচ্ছে না। কিন্তু আমার কাছে তো আর কোনো টাকা নেই। কিন্তু এ বাঁশি তো আমার কিনতেই হবে।

আজ এবং এক্ষুণি। সে তৎক্ষনাৎ ঠিক করে ফেললো যে সে আর দোকানীকে কোনো টাকাও দেবে না, দোকানীর কোনো কথাও শুনবে না।

যেই ভাবা সেই কাজ। দোকানীর দিকে না গিয়ে সে বাঁশি নিয়ে দিলো দৌড়। দোকানী প্রথমে থতোমতো খেয়ে গেলো। একি! ছেলেটা কি পয়সা ফেরত নেবে না?

পর মুহূর্তে দোকানীও দৌড়ে এলো। কিন্তু ততোক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। বালকটি দৌড়ে দিয়ে সোজা রাস্তায় না গিয়ে

একটা গলিতে ঢুকে পড়েছে। দোকানী আর দেখতে পেলো না তাকে।

সেদিন বালকটি আর স্কুলে গেলো না। স্কুল ছেড়ে দূরের এক মাঠে গিয়ে মনের আনন্দে ইচ্ছে মতো বাঁশি বাজালো।

বাঁশি বাজানো হচ্ছে না, সুর উঠছে না, তবু খুশিতে সে আত্মহারা। মনে মনে স্বপ্ন দেখছে সেও একদিন সেই বংশীবাদকের

মতো মধুর সুর তুলবে বাঁশিতে। দুপুর পার করে বিকেল পর্যন্ত সে সেই নির্জন মাঠে বাঁশি বাজালো। না খেয়ে কোনো খাবার, না পিয়ে কোনো পানীয়।

ক্ষুধা তৃষ্ণার সব উপলব্ধি যেনো নিঃশেষ হয়ে গেছে বাঁশি পেয়ে।

স্কুল ব্যাগে বাঁশিটি ভরে নিয়ে ব্যাগ কাঁধে প্রতিদিনের মতো যথাসময়ে বাড়ি ফিরলো সে।

প্রথমে ভেবেছিলো যে বাবা মাকে বাঁশি কেনার কথাটা বলবে না। কিন্তু পরে ভাবলো, সে তো আর টাকা চুরি করে বাঁশি কিনে নি, বরং টিফিন

খাওয়ার নিজের পয়সা বাঁচিয়ে কিনেছে। এটা তো তার গর্বেরই বিষয়। এই গর্বে সে আর কথা চেপে রাখতে পারলো না।

রাতে খাবার পরে সে তার বাবা মাকে বাঁশিটি দেখিয়ে বললো, এই যে দেখো, আমার বাঁশি; আমি নিজেই কিনেছি।

বাবা মা আঁৎকে উঠলেন, সে কী! টাকা পেলে কোথায়?

“হূঁহ্‌হু! হেহহে!” বেশ আত্মতৃপ্তির ভাব করলো সে। তারপর বললো,

“গত দুমাসে তোমরা টিফিন খেতে যতো টাকা দিয়েছিলে তার সব টাকা জমিয়ে আমি এটা কিনেছি।”

“কী বলছো? দুমাসের সব টাকা?”

“ইয়েস পাপা, ইয়েস ম্যাম। সব টাকা।”

তার মা হিসেব করলেন যে দুমাসের সব টাকা জমালে সেটা পঞ্চাশ টাকার কাছাকাছি হবে। কিন্তু এ বাঁশির দাম তো আট দশ টাকার বেশি হবে না।

এবার মা তার মাথায় হাত দিয়ে আদর করে বললেন,

“আচ্ছা বাবা, সত্যি করে বলো তুমি কি সব টাকা দোকানীকে দিয়ে এসেছো।”

“হ্যাঁ মম, সব দিয়ে দিয়েছি।”

বলেই সে বাঁশি কেনার সব গল্প শুনিয়ে দিলো।

এবার তার বাবা বললেন, “তুমি তো মহা বোকার মতো কাজ করেছো। এ বাঁশির দাম তো দশ টাকার বেশি নয়।”

শুনে বালকটির সমস- আনন্দ মুহূর্তের মধ্যে কোথায় যেনো উধাও হয়ে গেলো। সে কান্না জুড়ে দিলো। হায় সে কী করেছে!

সে তো আরো ছটি বাঁশি কিংবা অন্য খেলনাও অনেকগুলো কিনতে পারতো। এক বাঁশি কিনতে গিয়ে সে তার সব টাকা ফুরিয়ে দিয়েছে!

বৃষ্টি, তোমার খারাপ লাগলেও আমি বলবো তুমিও সেই বালকের মতো ঠকে যাওয়া এক বোকা বালক।

বাঁশি চিনতে ভুল করার মতো তুমি এখনো মানুষ চিনতে ভুল করে যাচ্ছ! ভুল করে বারবার কষ্ট পাচ্ছো।

প্রথম জীবনে তুমি বোকামি করে অথবা আবেগের কাছে ধরাশয়ী হয়ে একটা ভুল করেছিলে, যা তোমাকে অনেকদিন ভুগিয়েছে।

এখন তুমি আমাকে ভালোবেসে, আমাকে চেয়ে, আরেকটা ভুল করছো। তুমি আমাকে মনেপ্রাণে চেয়ে আসলে বেশি দামে শস্তা বাঁশি কিনতে চাইছো।

আমি যদিও নিজেই সেই রঙিন চকচকে অথচ শস্তা বাঁশি, তবুও আমি তোমাকে বাঁচাতে চাচ্ছি যাতে

তুমি আমাকে চেয়ে আমাকে পেয়ে কখনো না ঠকো। তোমার মতো সুন্দরী চমৎকার একটা মেয়ের আসলে অনেক সুখী

শানিত্মময় জীবন প্রাপ্য, যা তুমি কখনোই আমার কাছে এসে পাবে না। সত্যি কথা কি, তুমি দেখো না, আমি কীভাবে তোমার সাথে কথা বলি?

যতোটা কদর্যভাবে এবং কাঠখোট্টা সুরে আমি তোমার সাথে কথা বলি, আমার ভেতরটা তারচেয়েও কদর্য।

আমার মনটা যে সংকীর্ন, অনুদার, এটা আমি জানি। এতে আমার বেশি কষ্ট নেই। পৃথিবীতে অনেক মানুষেরই মন খুব ছোটো।

আমার সমস্যা হলো এই ছোট্টো মনটা আবার নানা কুটিলতা আর জটিলতায় ভরা। আমার মনের এই চরিত্রের কথা আমি কাউকে বলি না।

তোমাকে বললাম, কারণ তোমার কোনো ক্ষতি আমি চাই না। তোমার মতো প্রকৃতি প্রেমী নরম মনের একটা মানুষ আমার মনের

ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠে আটকা পড়ুক এটা আমি মেনে নিতে পারি না।

বৃষ্টি, আমার অনুরোধ, তুমি ফিরে যাও। দয়া করে ফিরে যাও। মনে রেখো, পৃথিবীটা কিন্তু আমার মতো এতোটা খারাপ,

এতোটা নিষ্ঠুর হয়ে যায় নি। আমার কাছ থেকে একটু মুখ ফিরিয়ে দেখো।

পৃথিবী তোমার জন্যে ভালোবাসার দুহাত বাড়িয়ে অপেক্ষা করছে। তুমি ফিরে যাও। আমি তোমাকে বললাম, তুমি দেখো, আমাকে না পেলেও

অন্য অনেক ভাবে তুমি এতো ভালোবাসা, এতো আদর আর সুখ পাবে যে, ভুলেও আমার কথা তোমার আর মনে পড়বে না।

কারণ, তুমি এ রকমই। কখনো আধো আধো ভালোবাসা বাসতে জানো না। ভালোবাসলে সবটুকু দিয়েই ভালোবাসো।

আজ আমাকে ভালোবাসো বলে মনে হচ্ছে আমাকে ছাড়া তোমার চলবে না। আসলে এটা তোমার আবেগ।

আমাকে ছাড়াই তোমার বিগত বছরগুলো কী দিব্যি চলে গেছে না, বলো? ভবিষ্যতটাও চলে যাবে। এবং আমি আশা করবো বেশ আনন্দেই যাবে।

বৃষ্টি, আমি নিশ্চিত আমার এই চিঠি পড়ে তোমার খারাপ লাগছে। কিন্তু আমি ততোধিক নিশ্চিত যে একদিন তুমি আমার

উপর খুশি হবে এই ভেবে যে, আমি তোমাকে একটা ভুলের হাত থেকে বাঁচিয়েছি।

যখন একদিন কোনো এক রোদপোড়া অলস দুপুরে অথবা এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় অথবা আকাশ ভরা তারার মোহ ধরা অস্পষ্ট আলোয়

মধ্যরাতে অথবা পূর্ণিমার ভরা চাঁদের জোসনায় ভেসে যাওয়া রাতের শেষ প্রহরে কোনো এক ভালোবাসাময় সুপুরুষ পরম মমতা আর আদরে

তোমাকে বুকে টেনে নেবে সেদিন তুমি ঠিক বুঝবে আমার মতো রোবোট তোমার জন্যে কখনোই উপযুক্ত ছিলো না।

বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৯

মেঘের ভালোবাসা

মেঘের ভালোবাসা

এই শীতের সকালে কে যেন রিহান এর
গায়ে এক জগ পানি ঢেলে দিল।সে ঘুম
থেকে উঠে গেল।
-আমার গায়ে পানি দিল কে রে?
-আমি দিয়েছি।
এই বলে মেঘ শুভ দিকে চোখ বড়
করে তাকালো।
শুভ বুঝতে পারলো আজ কিছু একটা হয়েছে।
মহারানী রেগে আছে।আল্লাহ ই জানেন
কি আছে কপালে।
-পানি দিলি কেন?
-আবার জিগায় পানি দিলি কেন?আমার
ইচ্ছা হইছে দিছি।
-ইচ্ছা হলেই দিবি?
-আজ যে আমার বার্থ ডে মনে আছে তর?
আমাকে উইস করিস নি কেন?
রিহান এর মনে ছিল না আজ যে মেঘের
বার্থ ডে।উইস ত করে নি।বাট কিছু
একটা বলে ত কাটাতে হবে।তাই সে বললো
-আমি ত জানি ই আজ আপনার জন্মদিন।
-তাহলে উইস করিস নি কেন?জানিস না তুই
সবার আগে উইস না করলে আমার খারাপ
লাগে?
বলতে বলতেই চোখে জল এসে গেল মেঘ এর।
-হুম জানি ত।কিন্তু ভাবছিলাম এবার অন্য
কিছু করবো।
-কি করবি?
-সবার শেষে উইস করবো।প্রতিবার ত সবার
আগে করি।।তাই ভাবছিলাম এবার সবার
পরে উইস করবো।
-হইছে হইছে এত মিথ্যা আর বলতে হবে না।
রেডি হয়ে আসেন,বাইরে ঘুরতে যাব।
রিহান আর মেঘ ছোট কালের বন্ধু।
তারা একসাথে সেই স্কুল কলেজ
থেকে পড়তেছে।তাদের মাঝে রয়েছে গভীর
বন্ধুত্ব ও।তবে কেউ জানে না এর বেশি কিছু
আছে নাকি।রিহান
রেডি হয়ে এলে তারা বের হয়ে ঘুরতে।
একটা পার্কে বসে আছে দুজনে।
-আমাকে গিফট দিলি না রিহান?
-হুম।দিব।কি চাস বল?
-তুই যা দেবার দে।
-না তুই যা চাইবি তাই দিব।বল কি চাস?
-সত্যিই যা চাইবো দিবি?
-হ্যা রে পাগলি।
-আমি তকে চাই,
-আমাকে দিয়ে কি করবি তুই?
-বেধে রাখবো মনের মাঝে
-না হবে না তাহলে,,,
-কেন দিবি না তকে?
-বেধে রাখলে দিব না
-তাহলে
-আমাকে তর
কোলে মাথা রেখে থাকতে দিলে সারা জীবন
তাহলে দিব।
-তাহলে নিব না আমি
-কেন নিবেন না?
-আমি আরো ভাবলাম আমি তর
বুকে মাথা রাখবো তা না তুই তুই আমার
কোলে মাথা থাকবি।তাহলে আমার কি হবে।
-তর কিছুই হবে না।
এই কথা শুনে মেঘ কান্না শুরু করলো।
রিহান তাকে একটা থাপ্পড়
দিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলো।এখন ত
হ্যাপি পাগলী।
-হ্যা সারা জীবন রাখবি ত?
-হুম।রাখবো।
রিহান এর বুকে মাথা রেখে মেঘ
ভাবতে লাগলো সে তার সেরা গিফট
পেয়ে গেছে।আর কিচ্ছু চায় না সে।

“যখন তুমি

“যখন তুমি”

সব কিছু ভেঙ্গে যাবার পর
আর কোন চাওয়া নেই নেই কোন বাসনা, নেই কামনা
কোন কিছুই আর টানে না আমায়
শুধু টানে কিছু স্মৃতি
কিছু ফিরে না পাবার সময়;
যখন তুমি সাথে ছিলে!

যখন তুমি পাশে ছিলে কতকিছুই থাকতাম ভুলে!
আমার অবস্থান, তোমার অবস্থান,
আমার চাওয়া, তোমার পাওয়া,
সব ভুলেছিলাম!
মনে হয়নি আমি তুমি ভিন্ন
ভেবেছিলাম আমি তুমি মানে আমরা
নই আমি তুমি মানে আমি!

কিন্তু সব ভুল ছিল ছিল
সব মিথ্যে
আমিও মোহে পড়েছিলাম,
প্রথম ভালবাসার মোহ!
প্রথম নারীর ছোঁয়ার মোহ,
প্রথম বিশ্বাসের মোহ!

যখন তুমি বলতে ভালবাসি;
ভেবেছিলাম তুমি বুঝি কোন স্বর্গের দেবী
ভেবেছিলাম প্রেমের দেবতা নিজেকে!
ভেবেছিলাম আমার নামে পুজো দেবে
কোটি প্রেম-ভক্ত
ভেবেছিলাম আমরাও হব ইতিহাসের সাক্ষ্য!

ভুল, সবই ভুল!
ভালবাসা আর প্রেম
যেমন এক নয়
আমি আর তুমিও এক নই।

অর্বাচীন আদিত্য
kobita:
“যখন তুমি”

নীল ডায়েরি

নীল ডায়েরি

নিষাদ এর সাথে মিতুর যোগাযোগ হয়নি আজ ৪দিন অবশ্য এতেঅবাক না মিতু কারণ নিষাদ মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই উদাও হয়ে যায় তখন থাকে হাজার খুঁজেও পাওয়া যাবেনা।।তবেএবার ব্যাপার টা আলাদা কারণ আগে উদাও হওয়া মানে শুধু দেখা না করাকে বুঝাত কিন্তু ফোনে সব সময় কথা হত এবং ওয়াটস এপ,ফেবুতে চ্যাটিং হত তবে এবার সব কিছুই অফ মিতুর সাথে নিষাদ এর শেষ কি কথা হয়েছিল সেটা মনে করার চেষ্টা করছে মিতু

-শোন কিছু দিনের জন্য হাড়িয়ে যাচ্ছি..(নিষাদ)
-তা কোথায় হাড়াচ্ছিস...(মিতু)
-এখনো ভাবিনি তবে হাড়িয়ে যেতে ইচ্ছা করছে।
-হঠাৎ হাড়িয়ে যাওয়ার কারণ জানতে পারি।।
-দেখতে চাই কেউ আমাকে মিস করে কিনা?
-সেজন্য হাড়িয়ে যেতে হয়।।
-মাঝে মাঝে হয় যদি দেখি সে মিস করতে শুরু করেছে তাহলেফিরে আসব।।
-সে যদি মিস না করে।।
-তাহলে হয়ত ফিরে নাও আসতে পারি।।
-এটা আবার কেমন কথা তা কার প্রেমে পরলি রে...
-প্রেমে আমি পরিনি প্রেম আমার উপর পরেছে রে।।
-আহা রে...
এইটাইপ কথা বার্তা হয়েছিল মিতু বিশ্বাস করেনি যে সত্যি সত্যি নিষাদ হাড়িয়ে যাবে।।এখন মিতু নিষাদ এর বাসায় এসেছে দেখতে যে নিষাদ বাসায় লুকিয়ে আছে কিনা যদি লুকিয়ে থাকে তাহলে ঠাশ করে থাপ্পড় দিবে এই ৪দিন মিতুর যে কিভাবে কেটেছে সেটা মিতু ছাড়া কেউ জানেনা বার বার ফোন চ্যাক করেছে যদি কুত্তা টা একবার মেসেজ দেয় সারা রাত ঘুমায়নি যদি গভীর রাতে হঠাৎ নিষাদ ফোন দেয়
আর সে ফোন ধরতে না পারে এই ভয়ে।মিতু ভালই বুঝতে পেরেছে যে নিষাদ এর উপর সে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়েপরেছে।

এখন মিতু নিষাদ এর রুমে বসে আছে এর আগেও মিতু নিষাদ এর বাসায় এসেছে নিষাদ এর আম্মু মিতুকে অনেক পছন্দ করেন। নিষাদ নাকি ৪দিন আগে কোন এক ফ্রেন্ড এর বাসায় গিয়েছে বলেছে ৮দিন থাকবে অবশ্য ফোনে কথা হয় তার ফ্রেন্ডের ফোন থেকে বাসায় ফোন করে।মিতু নিষাদ এর আম্মুকে দিয়ে নিষাদ কে ফোন করিয়ে বলিয়েছে যে তাড়াতাড়ি নিষাদ যেন বাসায় চলে আসে ইমার্জেন্সি প্রয়োজন।।মিতুর হঠাৎ নিষাদের টেবিলের উপর চোখ গেল সেখানে একটা নীল রং এর ডায়েরি দেখতে পেয়ে মিতু
সেটা খুলে পড়তে শুরু করল...
৭নাম্বার পেইজে লেখা..০৪/০৮/১৫
"তকে অনেক ভালবেসে ফেলেছি যদিও তুই আমাকে ভালবাসিস না সেটা ভাল করেই জানি তবুও জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে তুই কি ঘুমাতে যাবার সময় আমার কথা ভেবে ঘুমাতে যাস কিংবা প্রতিদিন সকালে উঠে সবার আগেআমার কথাই তর মনে হয়"

১৮নাম্বার পেইজে লেখা...০৫/০৬/১৬
"তুই নিজেও জানিস না তকে রাগলে অসাধারণ দেখতে লাগে কেন জানি বার বার তর প্রেমে পরতে ইচ্ছে হয় যদিও তুই আমার প্রেমে পরবিনা কারণ মেয়েরা ফাজিল ছেলে পছন্দ করে হাসার জন্য তবে ভালবাসে না।" 

৩৩নাম্বার পেইজে লেখা..০৮/০৯/১৬
ভালবাসি কাউকে বলতে হয়না বুঝে নিতে হয় একটু শেয়ারিং,একটু কেয়ারিং,একটু জগড়া, অনেকটুকু আদর আর স্নেহ নিয়ে ভালবাসা তৈরি হয়।।সো তোমাকে ভালবাসি এটা বলতে পারব না মুখে বা কোন চিঠি লিখে নীল খামেভরে পাঠাতে পারব না কিংবা কোন sms এ লিখে তোমাকে সেন্ড করতে পারবনা তুমি নিজ দায়িত্বে বুঝে নিতে হবে মেয়েদের অনেক সুপারন্যাচারাল পাওয়ার এর মধ্যে ছেলেদের বুঝে ফেলাও একটা পাওয়ার সো তোমাকে সেই পাওয়ার কাজে লাগিয়ে আমার অবস্থা বুঝতে হবে।।যদি না বুঝো তাহলে হাড়িয়ে যাব হাজার খুঁজেও পাবেনা।।

৪৩নাম্বার পেইজে লেখা....২২/১২/১৬
আমি অপেক্ষায় আছি,
তোমার হাতটি ধরার।
আমি অপেক্ষায় আছি,
কোন পূর্ণিমার রাতে তোমার সাথে পথ চলার।
আমি অপেক্ষায় আছি,
কোন এক ভোরের সূর্য উদয় দুজনে একসাথে দেখার।
আমি অপেক্ষায় আছি,
তোমার হাত থেকে একগুচ্ছ নীল গোলাপ পাবার আশায়।।
আমি অপেক্ষায় আছি শুধু অপেক্ষায়।।।।

এর পরে আর লিখা নেই মিতু ডায়েরি বন্ধ করে বসে রইল তার মাথায় কিছুই ঢুকছেনা নিষাদ তাকে ভালবাসে সেটা সে অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে বাট এতটা ভালবাসে বুঝতে পারেনি সেও যে নিষাদ কে ভালবেসে ফেলেছে সেটাও ৪দিন-রাতে বুঝে ফেলেছে।।হঠাৎ মিতু উপলব্ধি করল তার চোখ পানিতে ঝাপসা হয়ে আসছে একি সাথে ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি ফোটে উঠেছে যেন আনন্দে তার মন ভেসে যাচ্ছে।
নিষাদ বাসায় ঢুকেই ঠাস্কি খেয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কারণ মিতু তার সামনে তবে মুখে রাগের কোন চিহ্ন নেই যেন অনেক খুশিতে আছে তবে সেটা প্রকাশ করতে চাচ্ছেনা।।
-বাহিরে চল..(মিতু)
-আচ্ছা চল...(নিষাদ)
মিতু আর নিষাদ বাহিরে এসে দাঁড়িয়েছে হঠাৎ মিতু নিষাদের দিকে হাত বাড়িয়ে বলল নে ধর নিষাদও হাত ধরে বলল

-কি?
-শোন আজ পূর্ণিমা সো আজ আমার হাত ধরে হাটতে হাটতে পূর্ণিমা উপভোগ করব একটু পরেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে আকাশে উঠবে রুপার তালার মত চাঁদ যার আলোয় সারা শহর আলোকিত হয়ে যাবে।।আর একটা কথা তর নীল ডায়েরি টা আমি সম্পূর্ণ পড়ে ফেলেছি অবশিষ্ট কিছু থাকলে লিখে ফেলেছিস। এ কথা বলেই মিতু হাসতে লাগল নিষাদও মিতুর দিকে তাকিয়ে রইল যেন পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর হাসি সে দেখছে এই সুন্দর হাসির থেকে পৃথিবীতে আর সুন্দর কিছুই হতে পারেনা।

অতঃপর ভালোবাসা

অতঃপর ভালোবাসা

তুই আমাকে এখনো ভালোবাসিস ?
– না।
– কেন ?
– কেন আবার কি ?
– ভালোবাসিস না কেন ?
– যখন ভালোবেসে ছিলাম তখন তো মূল্য দিলি না।
– তুই তো আমাকে বলিসনী কোন দিন ?
– তোর বোঝা উচিত ছিলো।
– তুই না বললে কেমন করে বুঝবো ???
– কেমন করে বলব ? বলার আগেই তো তুই ওই ছেলেটাকে আমাদের মাঝে নিয়ে আসলি।
– ও আমার জাষ্ট ফেন্ড ছিলো আর কিছু না।
– আমি তো তোর বেষ্ট ফেন্ড ছিলাম। মাএ দুই দিনের একটা ছেলের জন্য তুই আমাকে ভুলে গেলি ?
– আমি তোকে ভুলিনী, তুই আমার কাছ থেকে দূরে চলে গেছিস।
– কেন গেছি তু্ই জানিস না ?
– না।
– জানবি কেমন করে ? আমি তো তোর কেউ ছিলাম না।
– এমন ভাবে বলিস কেন ? তু্ই তো জানিসই আমি একটু কম বুঝ। বললেই পারিস।
– আমি তোর পাশে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারি না।
– একবার বললেই পারতি !!
– কেন বলব ? তুই বুঝিতে পারিস না ?
– বুঝলে কি আর তোর থেকে দূরে থাকতাম।
দুজনেই চুপ। কিছুটা সময় নিরবতার পর দিশা বলে উঠল,
– চুপ কেন ?
– এমনিই।
– কাউকে ভালোবাসিস ?
– না।
– ভালোবাসতি ?
– হ্যা।
– সেদিন বলিসনী কেন ?
– বলার সাহস ছিলো না।
– কেন ?
– তোকে হারানোর ভয়ে।
– কেন হারাবি আমায় ?
– তোকে বলার পর যদি তুই “না” বলে দিস। যদি তুই চলে যাস আর আমাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট করে দিস।
– তুই কেমন করে ভাবলী “তোকে ছেড়ে আমি চলে যাবো ?”
– তাহলে এই দুই বছর কোথায় ছিলি ?
– ওটা তো……………….!!! থাক পুরানো কথা বাদ দে।
– ok, দিলাম।
আবারো নিরবতা দুজনের মাঝে। প্রকৃতি টাও কেমন যেন ওদের সাথে শান্ত হয়ে গেল । মনে হচ্ছে আকাশেরও বুঝি আজ মন খারাপ। এই বুঝি কান্না শুরু করবে।
– কিছু বলবি ?
– কি বলবো ?
– যা ভাবছিস এখন।
– তুই বলতে পারিস না ?
– না।
– কেন ?
– তুই জানিস না, “মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না”।
– কেন ফাটে না ? তোরা ফাটাতে চাসনা দেখেই ফাটে না।
– হা……..হা……..হা……..হা……..!!!
– তোর হাসিটা এখনো আগের মতোই সুন্দর। (দিশার দিকে তাকিয়ে বিপলু)
– যাক বাবা, আমার হাসির কারণে হলেও তুই একবারের জন্য আমার দিকে তাকালি। এতক্ষণ তো আমার মনে হয়েছিলো আমি কোন রোবটের সাথে কথা বলছি।
– (চুপ)
– আচ্ছা আমি আসি (দিশা উঠতে যাবে ঠিক তখনি দিশার হাত ধরে ফেলল বিপলু)
– বস।
– কেন বসবো ? তুই তো কিছু বলবি না !!!
– বস বলছি।
– বল, কি বলবি ?
– আমার হাতটা একটু শক্ত করে ধরবি ?
– হুম ধরলাম।
– ছোটবেলায় তোকে হরলিক্স খাওয়ানী ?
– কেন ? (বিস্মিত হয়ে)
– তোকে শক্ত করে ধরতে বলসি, স্পর্শ করতে বলিনী।
– ok বাবা, ধরলাম। এবার বল কি বলবি ?
– দিশা, আমি…….
– হুম….!!
– আমি……
– তারপর ?
– তোকে…
– হুম…..!!
– তোকে…
– তোকে কি …..??
– আমি একটু পানি খাবো, একটু পানি দে…। (হতবিহ্বল হয়ে পড়লো বিপলু)
– (হাত ছেড়ে দিয়ে রাগান্বিত হয়ে) যা ওই দোকান থেকে খেয়ে আয়।
– তোর কাছে নেই ?
– না।
বিপলু উঠে পানি খেতে চলে গেল। এমন ভাবে গেল মনে হয় কত বছরের তৃষ্ণাত। অপর দিকে দিশার মনটা খারাপ হয়ে গেল। আজ দুই বছর পর ওদের দেখা অথচ বিপলু ওর মনের কথাটা আজও বলতে পারলো না। আজ থেকে ঠিক তিন বছর আগে এই দিনে দিশার সাথে বিপলুর প্রথম পরিচয় হয়। বন্ধুত্বের কিছুদিন পরেই দিশাকে ভালোবাসতে শুরু করে বিপলু। দিশাও ব্যাপারটা বুঝতে পারে কিন্তু না বুঝার ভান করে থাকে। মেয়েদের এই এক স্বভাব, “বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না”। ওই দিকে বিপলু নানা কথা-বার্তায়, চাল-চলনে দিশাকে বুঝাতে চেষ্টা করে যে সে দিশাকে ভালোবাসে। দিশা বুঝেও সবসময় না বুঝার ভান করে থাকতো। কারণ, দিশা সবসময় চাইতো বিপলু দিশাকে সরাসরি প্রপোজ করুক। সব মেয়েরেই এই রকম স্বপ্ন থাকে যে তার ভালোবাসার মানুষ তাকে আগে প্রপোজ করুবে, তার মনের কথাটা বলবে কিন্তু বিপলু সেটা পারছে না শুধুমাএ বন্ধুত্বটা নষ্ট হওয়ার ভয়ে। কোনদিন আর পারেওনী। মাঝে অন্য একটা ছেলের জন্য দুই জনের বন্ধুত্বের ফাটল দেখা দেয়। অতঃপর দীর্ঘ দুই বছর পর আজ আবার তাদের দেখা কিন্তু বিপলু আজও দিশাকে মনের কথা না বলায় দিশার মন খারাপ।
৩০ মিনিট হয়ে গেল বিপলু এখনো আসছে না। দিশা ফোন দিলো কিন্তু বিপলু ফোনটাও ধরছে না। হয়তো বিপলু চলে গেছে, হয়তো বিপলুর আজও বলার সাহস হয়নী এমনটা ভেবে দিশা উঠে দাড়ালো। হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন “দিশা” বলে চিৎকার দিয়ে উঠল। দিশা পিছনে ফিরে তাকালো। আরে এতো বিপলু ! ও একটু দূরে হাটুগেড়ে বসে আছে, হাতে এক গুচ্ছ লাল গোলাপ। বিপলু লাল গোলাপ গুলো দিশার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে চিৎকার করে বলে উঠল,
– দিশা……, I……Love……You……..!!!
লেকের পাড়টা যেনো বিপলুর চিৎকারে কেপেঁ উঠল। লেকের পাড়ের উৎসুক মানুষ গুলোর দৃষ্টি এখন শুধু বিপলু আর দিশার দিকে। এমন দৃশ্য হয়তো আজ বিরল তাই কেউ কেউ ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে গেল। অন্য দিকে দিশা অপলক দৃষ্টিতে বিপলুর দিকে তাকিয়ে রইল। যে বিপলু ভালোবাসি কথাটা বলতে তিন বছর সময় নিলো, যে বিপলু মনের কথাটা বলতে গেলে হাত কাপঁতে শুরু করে সেই বিপলু আজ পুরো পৃথিবীর সামনে প্রপোজ করল। এটা ভাবতেই দিশা অবাক হয়ে গেল। দিশা কেমন যেনো নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। দিশার বিস্ময় যেনো কাটছে না। বিপলু সত্যি আজ প্রপোজ করল নাকি দিশা স্বপ্ন দেখছে। কেন যেনো আজ নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না দিশা। সব কিছুই যেনো আজ স্বপ্ন মনে হচ্ছে। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে দিশার চোখে পানি চলে আসল।
– কিরে আর কতক্ষণ বসে থাকবো ??
বিপলুর কথায় যেনো জ্ঞান ফিরল দিশার। দিশা আস্তে আস্তে বিপলুর দিকে এগিয়ে আসলো। বিপলুর হাত থেকে ফুলের তোড়াটা নিলো। বিপলু উঠে দাড়ালো। দিশা বিপলুর দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইল।
কিছুক্ষণ পর_________
– কিরে, কিছু বলবি না ?
– কি বলবো ? (দিশার চোখের পানি)
– তুই কাঁদছিস কেন ?
– মাইর খাবি। এই কথাটা বলেতে এত সময় লাগলো ???
– ওকে, সরি…..।
– কানে ধর।
– কার ? তোর না আমার ?
– তোর, শয়তান। (ধমক দিয়েই বলল দিশা)
বিপলু কানে ধরতে যাবে ঠিক তখনি দিশা “I Love You Too” বলে বিপলুকে জড়িয়ে ধরল। দিশার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো। বিপলু জানে দিশার চোখে আজ কোনো কষ্টের কান্না ছিলো না, যা ছিলো তা ছিলো আনন্দের। আর বিপলুর চোখে-মুখে ছিলো আনন্দের হাসি। গত দুই বছর বিপলু দিশার জন্য অনেক কেঁদেছে, সেই কাঁন্না আজ হাসিতে রুপান্তরিত হয়েছে।
মরাল : সত্যিকারের ভালোবাসায় যতই ফাটল ধরুক না কেন, একদিন না একদিন মিলন ঠিকই হয়______

বুধবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৯

একটি ছোট কষ্টের কাহিনী

একটি ছোট কষ্টের কাহিনী একটি ছেলে যার ছিল অনেক স্বপ্ন। অনেকের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে। এই কারনে তার ফেসবুক এ আইডি খোলা। তার নাম ছিল রাফা। সে স্কুল-এ খুব চুপচাপ থাকতো। স্কুলে ছিল তার অনেক বন্ধু। কিন্তু সবাই ছিল ছেলে। কোন মেয়ের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়নি। ফেসবুক আইডি খুলেছে সে ২০০৯ সালে। তখন সে প্রতিদিন এ সাইবার ক্যাফ-এ গিয়ে ফেসবুক ব্যভার করতো। সে কখনো ভাবে নি যে তার আজ এই পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হবে। তখন তার ফেসবুক আইডি তে ও কোন মেয়ে বন্ধু ছিল না। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যায় সে। জানতে পারে যে তার মামাতো ভাইয়ের ফেসবুক আইডি আছে। ভাইকে তার ফ্রেন্ড লিস্ট এ অ্যাড করল সে। তার ভাই তাকে পরিচয় করিয়ে দিলো তার অনেক বন্ধু-বান্ধব এর সাথে। সাথে তার জিএফ এর সাথেও। রাফা তার ভাই এর জিএফ কে ভাবি বলে ডাকতো FB তে । সামনাসামনি তাদের এখন দেখা হয় নি। রাফা অনেক দুস্টামি করতো তার ভাবির সাথে। হঠাৎ একদিন তার ভাবি তাকে বলল তোমার জিএফ নাই। সে সরাসরি উত্তর দিলো না। ওর ভাবি একজন এর প্রফাইল লিঙ্ক দিয়ে বলল তোমার মত আমার এই বান্ধবীটিও একা। রাফা তাকে ফ্রেন্ড রেকুয়েস্ট পাঠায়। মেয়েটি এক্সেপ্ট করে। তার নাম তানি। তাদের মধ্যে অনেক দিন কথা হয়। তানি কে তার খুব ভালো লেগে যায়। কিন্তু সাহস হয়নি কখনো বলার। এমন করে অনেক দিন কেটে গেল। রাফার SSC পরীক্ষা এসে পরে। পরীক্ষার আগে একদিন সাহস করে তানি কে তার ভাল লাগার কথা বলে। তানি ৩ দিন এর সময় নেয়। এর পর এর কাহিনী আমি আগামি কাল লিখব…………… ৩দিন সময় নিয়ে সে আর আসে না… ৩দিন এর জায়গায় ১৫দিন পার হয়ে যায়। কিন্তু তানি এখনও অনলাইন এ আসে নি। আমি আমার বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। তানি কে পাব না বলে ধরে নিলাম। তখন এত কষ্ট লাগে নি। ৩সপ্তাহ পর ………… একদিন দেখি তানি অনলাইন এ। আমি তাকে কিছু বললাম না। সে আমাকে বলল আমি তোমার প্রোপজাল আমি এক্সেপ্ট করলাম। আমি তখন ও এত খুসি হয় নি। আমি তানি কে জিজ্ঞাসা করলাম, এত দিন কোথায় ছিলে?? তানিঃ হ্যাঁ বলব নাকি না বলব তা চিন্তা করতে করতে আমার জ্বর এসে গিয়েছিল। তাই আস্তে পারি নি। এর পর থেকে অনেক কথা হত আমাদের। SSC পরীক্ষা শেস হওয়ার পর একটি মোবাইল কিনলাম। তানি আর আমি এবার মোবাইলে কথা বলেই দিন কাঁটিয়ে দিতাম। এভাবে ৫ টা মাস পার হয়ে গেল…… তানির ফেমিলি থেকে চট্টগ্রাম আসছে সবাই। আমাদের দেখা করার সুযোগ হয়ে এলো। তানি তারিখ ফিক্সড করে জানায়। আমদের সুন্দর ভাবে দেখা ও হয়। আমার জীবনের এইদিনটি অতি গুরুত্তপূর্ন। আমি অন্য দিনের কথা ভুল্লেও এইদিনের কথা ভুলবো না। জীবনে এই প্রথমবার সরাসরি কোন সমবয়সী মেয়ে এর সাথে কথা বলছি তারপর আবার আমি তাকে ভালবাসি। তখন জানি না আমি কোন দেশে হারিয়ে গিয়েছিলাম। একে অন্যের হাত ধরে অনেক্ষন বসে ছিলাম। অনেক একে অন্যের চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। তারপর দিন সে আবার ঢাকায় চলে গেল। আমার খুব দুঃখ হচ্ছিল যখন তানি চলে যাচ্ছিলো। মোবাইলে কথা বলতাম। তারপরও কেমন জানি লাগতো আমার। শুধু দেখা করতে ইচ্ছা করত। হঠাৎ একদিন তানি এর কোন খোঁজখবর নেই। কল ধরে না। কল ও করে না। আমি তো খুব চিন্তিত। ৮ দিন পর কল এলো তার নাম্বার থেকে। কিন্তু কন্ঠটা তার না। কান্না কান্না কন্ঠে সে মেয়েটি বলল… ভাইয়া, আপু আর নেই। আমি প্রথমে বুঝলাম না কি বলতে চাইছে। জিজ্ঞাসা করলাম সে কে? উত্তর আসলো সে তানির ছোট ভোন। তানি কোথায় জিজ্ঞাস করতেই উত্তর দিল আপু আর পৃথিবীতে নেই। এ কথা বলেই কেঁদে দিলো। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। আমি ঢাকায় যাওয়ার অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। আবার অই নাম্বার এ কল দিলাম। জিজ্ঞাসা করলাম কিভাবে মারা গেল। বলল ৯ দিন আগে এক্সিডেন্ট হয়েছিল। গতকাল কথাও বলেছে। কিন্তু আজ সকাল ৭টা থেকে আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেল। অবস্থা খারাপ এর পথে যেতে থাকে এবং ১১ টার দিকে মারা যায়। আমার জীবনে এত দুঃখ কখনও পাইনি। অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলাম। হঠাৎ একদিন তানির নাম্বার থেকে ১টা মেসেজ আসলো, যা পাঠিয়েছে তার ছোট ভোন। লেখা ছিল “ ভাইয়া, ওই দিন আমি আপনাকে সব কথা বলতে পারি নাই। আপু আমার কাছে আপনার জন্য একটা মেসেজ দিয়ে গিয়েছিল। মেসেজ টা হল “ আমার মনে হয় চলে যেতে হবে। তুমি আমার জন্য কাদবে না। আমার মত অথবা আমার থেকে আর ভাল কাও কে পেলে জীবন সাথী করে নিও। আমার কথা মনে করে কখনও কাদবে না, মন খারাপ করবে না। যদি বেঁচে থাকি তাহলে দেখা হবে ইনশাল্লাহ।“” এই মেসেজ পরে আমার আরও কান্না পেল। কষ্ট নিয়ে কাটিয়ে দিলাম এতটা দিন। তবে দুঃখ টা আরও বেড়ে গেল গত মাসের ২৮ তারিখ। আমি আমার বন্ধু আশিক, আসিফ, সজল এর সাথে অনেক্ষন দুষ্টামি, আড্ডা করে বাসায় ফিরলাম। কিন্তু ঘরে ডুকতেই কারন্ট টা চলে গেল। আমি আবার আড্ডা দেওয়ার স্থান এ গিয়ে বসলাম। ঠিক তখনি আমি দেখতে পেলাম আমার সামনে একটি গাড়িতে বসে আছে। আমি আমাকে বিশ্বাস করতে পারলাম না। তখনি আমি আমার মোবাইল থেকে তানি এর নাম্বার এ মিস কল দিলাম। দেখলাম ওই মেয়ে টা তার মোবাইলটি হাত এ নিলো। আমি আবার মিসকল দিলাম। আবার সেই মেয়েটি মোবাইল হাত এ নিলো। আমি পুরো সিউওর হয়ে গেলাম এটা তানি। আমি অনেক্ষন তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম আর কাঁদছিলাম। হঠাৎ বুঝলাম তানিও আমাকে দেখেছে। সে গাড়ি থেকে বের হয়ে এলো। আমি মনে করেছিলাম ও আমার দিকে আসবে। কিন্তু না সে তার গাড়িতে ঢেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো আর আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। তানি কে দেখে তখন আমার খুব ঘেন্যা হচ্ছিলো। আমার সাথে অনেক খারাপ কাজ করেছে সে। আমি ঐ স্থান থেকে সাথে সাথে চলে এলাম… চলে আসার সময় আমি পেছন ফিরে তাকালাম। দেখলাম সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে……………………………